• সোম. জুন 23rd, 2025

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ শব্দ, উচ্চারণে লাগে সাড়ে তিন ঘণ্টা

ভাষা মানুষের ভাব প্রকাশের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৭,১১১টি ভাষা প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে বহু ভাষা বিলুপ্তির পথে রয়েছে, আবার কিছু ভাষা এখনও টিকে আছে হাজার বছরের ইতিহাস নিয়ে। প্রতিটি ভাষার নিজস্ব শব্দভান্ডার, উচ্চারণরীতি ও ব্যাকরণ রয়েছে। আর এই শব্দভান্ডারে অনেক সময় এমন শব্দও থাকে যা আকারে এতটাই বড় যে তা উচ্চারণ করতেই সময় লেগে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

সাধারণত আমরা দৈনন্দিন জীবনে এমন সব শব্দ ব্যবহার করি যেগুলোর অক্ষর সংখ্যা ৩ থেকে ৮ এর মধ্যে। তবে কিছু কিছু ব্যতিক্রমী শব্দ রয়েছে যেগুলোর দৈর্ঘ্য এবং জটিলতা রীতিমতো অবাক করে দেয়। উদাহরণ হিসেবে ইংরেজি শব্দ ‘Floccinaucinihilipilification’-এর কথা বলা যায়। এই শব্দটির অক্ষরের সংখ্যা ২৯টি, যার অর্থ হলো কাউকে বা কোনো কিছুকে তুচ্ছ বা মূল্যহীন মনে করা। এটি ১৯শ শতকে ইংরেজি ভাষায় ব্যবহার শুরু হয়।

তবে অবাক করার মতো তথ্য হলো, ‘Floccinaucinihilipilification’ শব্দটির চেয়েও অনেক দীর্ঘ একটি শব্দ রয়েছে ইংরেজি অভিধানে, যার অক্ষরের সংখ্যা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৯টি। এত দীর্ঘ শব্দ আজ পর্যন্ত কেউ পুরোপুরি উচ্চারণ করতে পারেননি। কারণ এটি উচ্চারণ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। ফলে বাস্তবে এই শব্দ ব্যবহার করার কোনো উপযোগিতা নেই।

এই দীর্ঘতম শব্দটি আসলে একটি প্রোটিনের রাসায়নিক নাম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবদেহে প্রায় ২ কোটি প্রোটিন রয়েছে, যেগুলো গঠিত হয় অসংখ্য অ্যামাইনো অ্যাসিডের সমন্বয়ে। এই প্রোটিনগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘টিটিন’। ‘টিটিন’ একটি অতি বৃহৎ এবং জটিল প্রোটিন, যার রাসায়নিক নামটি এতটাই দীর্ঘ যে এটিকেই ইংরেজি ভাষার সবচেয়ে বড় শব্দ হিসেবে গণ্য করা হয়।

যদিও টিটিন নামক এই প্রোটিনের পূর্ণ রাসায়নিক নাম সাধারণ ব্যবহারে আসে না, তথাপি এটি ইংরেজি ভাষার ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে শুধুমাত্র এর দৈর্ঘ্যের জন্য। এই নামটি মূলত অ্যামাইনো অ্যাসিডের ধারাবাহিকতা তুলে ধরার জন্য তৈরি করা হয়েছে, এবং এটি কেবলমাত্র বিজ্ঞানের জগতে তথ্যগত গুরুত্ব বহন করে।

এই বিশালাকৃতির শব্দটি একটি উদাহরণ মাত্র, ভাষার বিস্ময়কর বৈচিত্র্যের প্রমাণ হিসেবে। এটি দেখায় যে, ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং জ্ঞান, বিজ্ঞান ও সৃষ্টিশীলতার এক বিস্তৃত ক্ষেত্রও বটে।