ছেলেদের স্টাইল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে চুলের কথা না বলে উপায় নেই। জামাকাপড়ের ফ্যাশনের পাশাপাশি এখন চুলের ছাঁটেও দেখা যাচ্ছে বৈচিত্র্য ও কল্পনার ছাপ। একজন ব্যক্তির মুখের গঠন, পেশাগত পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত রুচি অনুযায়ী হেয়ারস্টাইল বেছে নেওয়া আজকের দিনে সাধারণ ঘটনা। নিচে ছেলেদের জন্য আটটি জনপ্রিয় হেয়ারস্টাইল তুলে ধরা হলো, যা বর্তমানে তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
শর্ট কাট: সহজ ও আধুনিক
তরুণ ও কিশোরদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে শর্ট কাট। এতে চারপাশের চুল ছোট করে কেটে জেল বা ওয়াক্স দিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে স্টাইল করা হয়। এই কাট একে অনেকে “কক কাট” নামে ডাকলেও, আন্তর্জাতিকভাবে এটি “আন্ডার কাট” নামে পরিচিত।
ক্ল্যাসিক কাট: ফরমাল ও মার্জিত
দপ্তর বা অফিসমুখী পেশাজীবীদের মধ্যে ক্ল্যাসিক কাট এখনও সমানভাবে জনপ্রিয়। এতে একপাশে সিঁথি করে চুল আচড়ানো হয়। মাঝবয়সী ব্যক্তিদের জন্য এটি একদম উপযুক্ত, কারণ এই কাট চেহারায় আনে পরিপক্বতা ও গাম্ভীর্য।
ফেড কাট: স্টাইলের সংক্ষিপ্ত রূপ
এই হেয়ারস্টাইলে পেছনে এবং কানের ওপরে চুল প্রায় পুরোপুরি কেটে ফেলা হয়। সাধারণত কানের এক ইঞ্চি ওপর থেকে এবং মাথার অর্ধেক পেছন থেকে চুল ছাঁটা শুরু হয়। স্টাইলিশ ও সাহসী চেহারা পেতে এটি আদর্শ।
ক্রু কাট: ভারসাম্যের নিদর্শন
ক্রু কাটে পাশের এবং পেছনের চুল বেশ ছোট রাখা হয়, এবং ওপরে ধীরে ধীরে চুলের দৈর্ঘ্য কিছুটা বাড়ে। মাঝারি উচ্চতার এই চুলে থাকে খাড়া ভাব, যা দেখতে স্মার্ট ও পরিচ্ছন্ন।
বাজ কাট: খেলোয়াড়দের পছন্দ
খেলাধুলায় যুক্ত যারা, তাদের জন্য বাজ কাট বেশ জনপ্রিয়। সৈনিক এবং অ্যাথলেটদের মধ্যে এই স্টাইল দেখা যায় বেশি। চুলের দৈর্ঘ্য সাধারণত এক ইঞ্চির চতুর্থাংশ হয় এবং গোসলের পর আঁচড়ানোর ঝামেলাও নেই।
লেয়ার স্পাইক: তাজা ও তরুণ
এই স্টাইলে কপালের ওপরের চুল ছোট করে স্পাইক রাখা হয় এবং মাথার উপরের দিকের চুল অপেক্ষাকৃত লম্বা থাকে। পেছনের চুলগুলো থাকে লেয়ার কাটা। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এটি সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত হেয়ারস্টাইলগুলোর একটি।
ইমো সুইপ: ক্যাজুয়ালদের পছন্দ
ইমো স্টাইল মূলত তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড। এতে মাঝারি দৈর্ঘ্যের চুল এলোমেলোভাবে ছাঁটা হয়, সামনের চুল থাকে বড় এবং কপাল ঢেকে রাখে। কানের পাশেও বড় চুল রেখে পেছনের চুল ছোট করে স্পাইকি করে তোলা হয়।
লম্বা চুলের স্টাইল: বহুমুখী বৈচিত্র্য
যাদের চুল ঘন ও লম্বা, তারা এই স্টাইলে নানা ধরনের রূপ দিতে পারেন। পনিটেল, খোলা চুল, এলোমেলো ঝুটি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিদিন নতুন রূপে চুল সাজানো যায়। সোজা বা কোঁকড়ানো—যেকোনো ধরনের লম্বা চুলেই ফ্যাশনের ছাপ থাকে অনন্য।
কাটিং খরচ ও বাজেট
এইসব স্টাইলের হেয়ার কাট সাধারণত ২০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৫০০ টাকার মধ্যে শেষ হয়। যদি চুলে রঙ করতে চান, তাহলে খরচ হতে পারে ১,০০০ টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।
উপসংহার
স্টাইলের জগতে ছেলেদের হেয়ারকাট এখন একধরনের আত্মপ্রকাশের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঠিক হেয়ারস্টাইল আপনার চেহারার সঙ্গে মানিয়ে গেলে তা শুধু সৌন্দর্যই নয়, আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলে। তাই নিজের মুখের গঠন, পেশা এবং রুচি বিবেচনা করে হেয়ারস্টাইল বেছে নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।