বাংলাদেশে স্যামসাং ও এলজি-র প্রযুক্তির নকশায় মানুষের প্রতি যত্নের স্বীকৃতি

স্যামসাংয়ের ‘비스포크 AI’ ডিশওয়াশারের বড় অর্জন

স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের ‘비스포크 AI’ সিরিজের ডিশওয়াশার ২০২৫ সালের ‘হিউম্যান ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড’-এ ‘বেস্ট অব দ্য বেস্ট’ সম্মাননা অর্জন করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার হিউম্যান ইঞ্জিনিয়ারিং সোসাইটি আয়োজিত এই পুরস্কার দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক ডিজাইন প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত, যেখানে ব্যবহারযোগ্যতা, নিরাপত্তা, দক্ষতা এবং ব্যবহারকারীর অনুভূতির দৃষ্টিকোণ থেকে পণ্য মূল্যায়ন করা হয়।

পুরস্কারজয়ী এই ডিশওয়াশারটিতে রয়েছে ‘অটো ওপেন ডোর’ প্রযুক্তি, যা হালকা চাপেই দরজা খুলে দেয়, ফলে হাতে থালা বা গ্লাভস পরা অবস্থাতেও ব্যবহারকারী সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া, উপরের তাকের ভারী থালাবাসন সহজে সরানোর জন্য রয়েছে ‘গ্লাইড রেইল’ প্রযুক্তি, যা ন্যূনতম প্রচেষ্টায় বক্স সরানো সহজ করে তোলে।

ব্যবহারবান্ধব ডিজাইনে নজরকাড়া উদ্ভাবন

এই ডিশওয়াশারে আরও রয়েছে ‘কাপ ফোকাসড ক্লিনিং জোন’, যা কাপের ভিতর পর্যন্ত নিখুঁতভাবে পরিষ্কার করে। একইসঙ্গে ‘বড় বাটি সংরক্ষণ তাক’ ও ‘ফ্রাইপ্যান হোল্ডার’ পণ্যটির ব্যবহারযোগ্যতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন জীবনে বাস্তব সুবিধা নিশ্চিত করেছে।

স্যামসাংয়ের অন্যান্য পণ্যেও প্রশংসা

বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেছে ‘비스포크 AI 하이브리드’ রেফ্রিজারেটর ও ‘비스포크 AI 스팀’ রোবট ক্লিনার। রেফ্রিজারেটরটিতেও রয়েছে ‘অটো ওপেন ডোর’, যাতে শিশুরাও বা বয়স্করাও অল্প স্পর্শে দরজা খুলতে পারেন। পাশাপাশি এতে রয়েছে ‘AI Vision Inside’ নামক একটি ক্যামেরা-নির্ভর প্রযুক্তি, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিতরে থাকা খাবারের তালিকা তৈরি করে। ৯-ইঞ্চি টাচস্ক্রিন ডিসপ্লের মাধ্যমে বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইস একসাথে নিয়ন্ত্রণের সুবিধাও রয়েছে।

স্যামসাংয়ের ডিজিটাল অ্যাপ্লায়েন্সেস বিভাগের নির্বাহী ইভোনা বলেন, “আমরা পণ্যের পরিকল্পনা পর্যায় থেকেই মানবকেন্দ্রিক ডিজাইনকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ভবিষ্যতেও আমরা এমন পণ্য তৈরি করব যা সবাই সহজে ও নিরাপদে ব্যবহার করতে পারেন।”

এলজি-র উদ্ভাবনী পণ্যে ডিজাইন পুরস্কার

এদিকে এলজি তাদের রোবট ক্লিনার পণ্যের জন্য ‘সেরা পণ্য’ সম্মান অর্জন করেছে। তাদের আরেক পণ্য ‘LG 마이컵’ – একটি টাম্বলার ক্লিনার – এবং বিশ্বের প্রথম তারবিহীন ও স্বচ্ছ টেলিভিশন ‘LG SIGNATURE OLED T’ পেয়েছে ‘সর্বোচ্চ উদ্ভাবনী পণ্য’ স্বীকৃতি।

‘LG 마이컵’ সহজ অপারেশনের মাধ্যমে টাম্বলার ধুয়ে এবং শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এর ৩৬০ ডিগ্রি ঘূর্ণনক্ষম ব্লেড এবং ৬৫ ডিগ্রি উচ্চচাপের পানির প্রবাহ কাপের ভিতরের-বাইরের অংশসহ ঢাকনাও পরিষ্কার করে।

অন্যদিকে, ‘OLED T’ টিভিটি স্বচ্ছ ও ব্ল্যাক স্ক্রিন মোডের মধ্যে রিমোটের মাধ্যমে বদল করা যায়। এটি শুধুমাত্র অসাধারণ OLED ডিসপ্লেই নয়, বরং বাস্তববাদী ও অ্যাগমেন্টেড রিয়েলিটি অভিজ্ঞতা দেয়। আরও চমকপ্রদ বিষয় হলো, এটি ৪কে ১৪৪ হার্জ ভিডিও তারবিহীনভাবে কোনো বিলম্ব বা গুণগত ক্ষতি ছাড়াই পরিবেশন করতে পারে, ফলে যেকোনো স্থানে স্থাপন সহজ হয়।

প্রযুক্তিতে মানবকেন্দ্রিকতা: ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

স্যামসাং ও এলজি-র এইসব পণ্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রযুক্তি শুধু স্মার্ট হলেই চলবে না, সেটি ব্যবহারকারীর দৈনন্দিন জীবনের সহজতাও নিশ্চিত করতে হবে। এবারকার পুরস্কারগুলোর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, কোরিয়ান প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ভবিষ্যতের পণ্যের ডিজাইনেও মানুষের আরাম, নিরাপত্তা এবং ব্যবহারযোগ্যতা সর্বাগ্রে বিবেচনা করছে।